TOP NEWS

Showing posts with label ইন্টারনেট. Show all posts

Thursday, March 1, 2012

Search Engine!!! আপনি কী জানেন???


Google, Yahoo, MSN, Ask এই চারটি সার্চ ইঞ্জিনের বাইরে আরও অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহারকারীর সংখ্যা অত্যন্ত কম। এমনকি এগুলা ছাড়াও যে আরও সার্চ ইঞ্জিন আছে এবং সেগুলাও যে আমাদের কাজে লাগতে পারে সে কথাও অনেকে বিশ্বাস করতে চায় না। অধিকাংশ ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর ধারনা হল Google এ খুজলে সব জিনিস একবারেই পাওয়া যাবে। Google এ যা পাওয়া যাবে না তা কোথাও পাওয়া যাবে না ।
কিন্তু Google ছাড়াও আরও অনেক সার্চ ইঞ্জিন আছে যেগুলা নির্দিষ্ট বিষয়ের ভিত্তিতে খুজতে সাহায্য করে। একমনই কিছু সার্চ ইঞ্জিনের কথা দেয়া হল।


ভিডিও সার্চ:
http://www.blinkx.com/
ভিডিও ফাইল খোজার সবচাইতে ভালো ইঞ্জিন গুলার মধ্যে এই Blinkx অন্যতম। ভিডিও ফাইল ছাড়াও বিভিন্ন অডিও ফাইল বা পডকাস্ট গুলা নির্দিষ্ট শব্দ(keyword) অনুযায়ী খুজতে পারবেন।এখানকার সবচাইতে মজার সুবিধাটি হল, ভিডিও ক্লিপটির বিষয়বস্তুর কোন নির্দিষ্ট অংশ লিখেও ঐ ভিডিওটি সার্চ করা যায়। যেমন Arnold Schwarzenegger এর টারমিনেটর সিনামার ক্লিপ খুজতে চাইলে আপনি যদি সিনামাটির সেই বিখ্যাত উক্তি I’ll be back লিখে সার্চ করেন তবুও আপনি ঐ সিনামার ক্লিপ গুলা খুজে পাবেন।


অডিও সার্চ: 

http://www.findsounds.com/
কাজ করতে গেলে প্রায়ই আমাদের বিভিন্ন ধরনের শব্দ বা বিভিন্ন বাদ্য যন্ত্রের তৈরী সুর ইত্যাদি দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে এই ওয়োব সাইটটি আপনাদের খুব কাজে লাগবে। এখানকার অডিও ফাইলের ডাটাবেজ ও অনেক বড় ফলে খুব সহজেই আপনি আপনার কাঙ্খিত অডিও ফাইলটি খুজে পাবেন।
এখানকার একটি বিশেষ সুবিধা হল এখানে নির্দিষ্ট ফাইল ফরম্যাট, ফাইলের সর্বোচ্চ আকার, আউটপুট চ্যানেল ইত্যাদি বিষয় গুলা ও সার্চের সময় নির্দিষ্ট করে দেয়া যাবে।


মেটা সার্চ :
http://clusty.com/
মেটা সার্চ ইঞ্জিন গুলা হল এমন একটি সার্চ ইঞ্জিন যেখানে কিছু লিখে সার্চ করলে অনেকগুলা সার্চ ইঞ্জিনের ফলাফল একসাথে দেখা যায়। Google, Yahoo, MSN এ আলাদা ভাবে খোজার চাইতে এধরনের ইঞ্জিন ব্যাবহার করা ভাল ।
সার্চ করার পর ফলাফল গুলা দুই ভাগে দেখানো হয়। প্রধান অংশে সার্চের ফলাফল গুলা দেখায় এবং বাম পাশে সার্চ করা বিষটির সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য সার্চ করার অপশন দেখা যাবে। সোর্স ট্যাবএ কোন কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে ফলাফল দেখানো হচ্ছে এবং ওয়েব সাইটগুলারএক্সটেনশন কি কি তা দেখা যাবে। যেমন linux লিখে সার্চ করা হলে cluster ট্যাবএ Operating System, Open source, GNU ইত্যাদি অপশন গুলা দেখা যাবে।


কোড সার্চ:
http://www.jexamples.com/
http://www.koders.com/
কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের প্রতিদিনই প্রায় নতুন নতুন প্রোগ্রাম তৈরী করতে হয়। প্রোগ্রামের উদাহারণ, স্যাম্পল কোড, ইউজার গাইড, প্রজেক্ট আউটলাইন , প্রজেক্টের কোড এর মত জিনিস গুলা প্রোগ্রামারদের কাজকে আরও সহজ করে দেয়। Jexamples সার্চ ইঞ্জিনে java সংক্রান্ত এবং koders সার্চ ইঞ্জিনে সকল প্রোগ্রামিং ভাষার বিষয় গুলা পাওয়া যাবে।
প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান
http://www.chacha.com/
কোন প্রশ্ন খুজতে হলে আমরা search বা ask ব্যাবহার করি। কিন্তু এই সার্চ ইঞ্জিনটির অন্য ইঞ্জিনগুলা থেকে আলাদা এই জন্য যে শুধু ওয়েব সাইট থেকেই নয় মোবাইল ফোন থেকে টেক্সট ম্যাসেজ এর মাধ্যমেও এই ইঞ্জিন ব্যাবহার করে সার্চ করা যাবে এবং সার্চের ফলাফলও টেক্সট ম্যাসেজের মাধ্যমে আপনার মোবাইলে আসবে।
[বাংলাদেশে মনে হয় হয় না]


শব্দের অর্থ বা সংজ্ঞা খোজা
http://www.metaglossary.com/
শব্দের অর্থ বা সংজ্ঞা খুজতে এই সার্চ ইঞ্জিনটি ব্যাবহার করা যেতে পারে।


সব রকম সার্চ এককসাথে
http://www.soople.com/
সব ধরনের সার্চ ইঞ্জিন এক সাথে পেতে চাইলে এটি ব্যাবহার করতে পারেন । একই পৃষ্ঠায় এক সাথে ২০ টি আলাদ আলাদা সার্চ ইঞ্জিন পাওয়া যাবে।


http://www.boxxet.com/
অন্যান্য সব ওয়েবসাইট থেকে আলাদা এই সার্চ ইঞ্জিনটি, কারন সাধারন ভাবে সার্চ ইঞ্জিন বলতে বুঝি  ওয়বপেজের একটি খালি জায়গা যেখানে কাঙ্খিত শব্দটি লিখে সার্চ করতে হয় । কিন্তু এখানে ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুব সহজেই খুজে বের করা অপশন পাওয়া যাবে।


টরেন্ট ফাইল খোজা
http://isohunt.com/
ফাইল ডাউনলোডের সবচাইতে জনপ্রিয় পদ্ধতি গুলার গকটি হল টরেন্ট ডাউনলোড।টরেন্ট ফাইলগুলা খুজতে এই সার্চ ইঞ্জিনটি ব্যাবহার করতে পারেন। এদের ডাটাবেস-এ ফাইলের সংখ্যা ২৪.৯২ মিলিয়ন।
http://www.msdewey.com/
এই সার্চ ইঞ্জিনটি দেখেন। অন্যরকম।
5:30 AM Posted by Just for you 0

Sunday, January 22, 2012

।। হিডেন ক্যামেরা ।। সতর্ক হওয়ার সময় এখনই ।।


সুপ্রিয় বন্ধুগণ।
‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’
  • কেমন আছেন সবাই,আসা করি ভাল…সবাই ভাল থাকুন এই কামনা করে আজকের টিউন।দৈহিক সুস্থতার জন্যে প্রয়োজন সুষম খাবার গ্রহণের পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম। কিন্তু পরিশ্রম পরিকল্পিত না হলে দৈহিক সৌন্দর্য ও সুস্থতা নিশ্চিত হয় না। দেহের প্রতিটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিমিত সঞ্চালন ও সক্রিয়তা না হলে দেহবিন্যাস সুষম ও সুগঠিত হতে পারে না। এজন্যেই দেহের জন্য দরকার হয়ে পড়ে পরিকল্পিত শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের।কষ্ঠ হলেও নামাজ পড়ুন আল্লাহ্‌র এবাদত এবং শরীরচর্চা বা ব্যায়াম হবে।এই বলে আজকে আপনাদের জন্য পোস্ট।
  • আধুনিক যুগে  বেচেঁ থাকার জন্য মানুষ প্রযুক্তিগত জিনিস ব্যাবহার করে।এবং নিজ সুবিধার জন্য আপনি সিক্যারিউটি ও রাখেন।আপনার যেমন সুবিধা দিবে,তেমনি ক্ষতিও করবে। 
  • নারী দেহের প্রতি পুরুষের আকর্ষণ বিধাতা কর্তৃক প্রদত্ত। কিন্তু তা যদি সীমা অতিক্রম করার মত হয় তাহলে তা আলোচিত হওয়ার মতই একটি বিষয় হয়ে দাড়ায়। মেয়েদের পোশাক পরিবর্তন করার স্থানগুলোতে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়া আজকের সর্বাধিক আলোচিত একটি ইস্যু। আপনার বোন পোশাক কিনতে গিয়ে কাপড় বদলাচ্ছে, কেউ না কেউ তা দেখছে; ভিডিও করছে। রুমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে আছেন, রেকর্ড হয়ে স্পেশাল পর্ণ হয়ে কারো বিশাল ব্যবসায় পরিনত হয়ে যাচ্ছে আপনার ভিডিও। আপনি হয়ত জানতেই পারবেন না আপনি পর্ণগ্রাফির মডেল হয়ে গিয়েছেন। আমাদের মা-বোনের ইজ্জত আজ পরিনত হতে চলেছে আরেকজনের মনোরঞ্জনের খোরাকে।

    হিডেন ক্যামেরা কোথায় বসান হয়?
    গোপন ক্যমেরা কোথায় বসানো হয় তা স্পেসিফিকভাবে বলা মুশকিল। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না গোপন ক্যামেরা আজকাল কোথায় কোথায় বসান হচ্ছে। সাধারনত যেখানে মেয়েরা কাপড় পাল্টায় যেমন  শপিংমলের ফিটিং বা ড্রেসিং রুম, বাথরুম, বিউটি পার্লার এগুলো গোপন ক্যামেরার আইডিয়াল স্থান। এছাড়া, আবাসিক হোটেলগুলোর বেডরুম, বাথরুম ইত্যাদিতেও গোপন ক্যামেরা থাকতে পারে।  নিচের ছবিগুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন গোপন ক্যামেরা কোথায় কোথায় থাকতে পারে।
    *আপনার বাসার রুমে ও অফিসে নিরাপদ রাখে এই ক্যামেরাটি।










    অনেকক্ষেত্রে আবার আয়নাকেও হিডেন ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এক্ষেত্রে আয়নাটি ডুয়েল মিরর হিসেবে কাজ করে। ডুয়েল মিররের উল্টোপাশ থেকে আয়নার এপাশের সবকিছুই স্পষ্টভাবে দেখা যায় সাধারন কাঁচের মত। কিন্তু এপাশ থেকে দেখলে এটাকে একটা আয়না ছাড়া আর কিছুই মনে হবেনা। অনেক গেস্ট হাউজে এই ডুয়েল মিররের উল্টোপাশে ক্যামেরা বসিয়ে কাপলদের ক্লিপ রেকর্ড করা হয়। 


    কিভাবে নিরাপদ থাকব? 
    • গোপন ক্যামেরা আছে সন্দেহ হলে চারপাশ ভাল করে দেখুন। কোথায় কোথায় গোপন ক্যামেরা থাকতে পারে তা তো দেখলেন। এছাড়াও ছাদের কোণা, দেয়ালের ছবি, ফুলের টব বা সন্দেহজনক সকল স্থান ভাল করে পর্যবেক্ষণ করুন।
    • গেস্ট হাউজ বা আবাসিক হোটেলে উঠার পূর্বে সম্ভব হলে একটি Mini hidden camera detector বা RF signal detector কিনে সাথে রাখতে পারেন। এগুলো খুবই ছোট সহজে বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস। 
    • মুলত রুমের অন্ধকার স্থানগুলিতে গোপন ক্যামেরা বসানো হয়। রুমের তুলনামুলক অন্ধকার স্থানগুলো ভাল করে দেখে নিন। 
    অন্ধকারে রাখা হিডেন ক্যামেরার ধারণকৃত দৃশ্য
    • রুমে যদি আয়না থাকে আর তা যদি আপনার সন্দেহ হয় তাহলে আয়নার উপর একটা আঙ্গুল রাখুন। আপনার আঙ্গুল আর আয়নার আঙ্গুলের প্রতিবিম্বের মাঝখানে যদি কোন ফাক না থাকে অর্থাৎ দুটি আঙ্গুলের মাথা যদি একেবারে একটার সাথে আরেকটা লেগে থাকে তাহলে বুঝবেন এটা ডুয়েল মিরর। আর যদি মুল আঙ্গুল ও আয়নার আঙ্গুলের মাঝে একটু ফাক থাকে তাহলে এটা একটা সাধারন আয়না হিসেবে ধরে নিতে পারেন।
    • বেশিরভাগ ক্যামেরার পাওয়ার অন করার পরপরই একটি এলইডি বাতি জ্বলে উঠে। রুম পুরোটা অন্ধকার করে কিছুটা সময় নিন যাতে আপনার চোখে অন্ধকারটা সয়ে যায়। এবার খুব ভাল করে লক্ষ্য করুন লাল, সবুজ বা হাল্কা নীল রঙের আলো কোথাও থেকে বের হচ্ছে কিনা। যদি এমনটি হয়, তাহলে আপনি নিশ্চিত যে সেটা ক্যামেরা। 
    • গোপন ক্যামেরা খুজে পেতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। অনেক ক্যামেরাতে মোশন ডিটেক্টর থাকে অর্থাৎ আপনি যেদিকে যাবেন, ক্যামেরাও সেদিকে ঘুরে যাবে। এধরনের ক্যামেরা খুজে পেতে প্রথমে রুমের সব জানালা দরজা বন্ধ করে পুরো রুম অন্ধকার করে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। এবার, কোন শব্দ না করে রুমে এদিক ওদিক যান যাতে করে ক্যামেরা আপনাকে ফলো করে। এবার খুব ভাল করে খেয়াল করুন ক্যামেরা আপনাকে ফলো করে ঘুরে যাওয়ার সময় কোন শব্দ হচ্ছে কিনা। 
    সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে গোপন ক্যামেরার হাত থেকে বাচতে চাইলে আপনার সতর্কতাই যথেষ্ট। সো সতর্ক থাকুন অলটাইম। 
    • আপনি হয়তো জিনিসটা আগে জানতেন কিনা জানি না ।কিন্তু প্রযুক্তিগত জিনিস গুলো কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে তা জানালাম।আপনি নিজে ও আপনার পরিবার সহ একটু সাবধান হন।
    এই প্রত্যাশা রেখে 
    আল্লাহ হাফেজ”

    *আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ ''নিজের জন্য সবকিছু শিখুন,নিজ এবং কারো ক্ষতি করার জন্য নয়, সে যেই হোক'' আল্লাহ মাফ করার মালিক।কোরআন ও হাদিস পডুন।আরেক মুসলমান কে-কষ্ঠ হলেও এ সুখবর পৌছেদিন মুসলমান ভাই হিসেবে খুশি হব।
11:34 AM Posted by Just for you 0

Thursday, November 24, 2011

Internet: Exam for Imaan, Akkhlak & Knowledge...



লেখকঃ মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম আল  হামদ
অনুবাদক : আবু শুআইব মুহাম্মাদ সদ্দিীক
ইন্টারনেট তথ্যজগতে একটি বিশাল আন্দোলন নিঃসন্দেহে। তবে এই তথ্যজগতটি ঈমান আখলাক এমনকী  বিবেক-বুদ্ধি পরীক্ষার একটি বিশাল ময়দানও বটে। যা শুভ  ও কল্যাণকর তাও এখানে  পুরোরূপে উন্মুক্ত, যা অশুভ-অকল্যাণকর তাও এখানে নানা ব্যঞ্জনে উপস্থাপিত। যে ইন্টানেট ব্যবহার করে সে তার জিহ্বা নির্বাধভাবে ছেড়ে দিতে পারে,  সে তার দৃষ্টি যেখানে ইচ্ছা সেখানেই ঘুরাতে পারে, সে তার হাত দিয়ে যা চায় তাই লিখতে পারে। তাকে নিবারণকারী কেউ নেই, তাকে ধমক দেওয়ারও কেউ নেই, না আছে কেউ থামিয়ে দেয়ার।
সে যদি ঊর্ধ্বে উঠতে সক্ষম হয়, পরিণামের প্রতি দৃষ্টি দেয়, তার প্রতিপালক তাকে দেখছেন এই বিশ্বাস হৃদয়ে জাগ্রত রাখে, তবে সে সফলতার সাথে প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সামনে এগুতে সক্ষম হবে। আর যদি সে নিজের লাগাম ছেড়ে দেয়, তার খায়েশ যেদিকে তাড়িত করে সেদিকে ধাবমান হয়, ঈমান ও তাকওয়ার প্রহরী তার হৃদয় থেকে বিতারিত হয়, তাহলে আবর্জনার স্তুপে ঢুকে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়, আর এর  অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হল  অপদস্ততা, শালীনতার মৃত্যু, নিকৃষ্টতা ও পঙ্কিলতায় নাক ঘর্ষণ।
ইন্টারনেট ও তার ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকার জন্য কিছু  পথ-পদ্ধতি রয়েছে, নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হল।

১- ইন্টারনেটের সদ্ব্যবহার

বুদ্ধিমানের কাজ হল ইন্টারনেটের সদ্ব্যবহার করা। নিজেকে অতিরঞ্জিত আকারে বিশ্বাস না করা; কেননা এ-ধরনের অতিবিশ্বাস নিজেকে  ফেতনায় নিপতিত করতে পারে, যার করালগ্রাস থেকে রক্ষা পাওয়া হয়ত অসম্ভব হয়ে ওঠবে।
যদি  কেউ ইন্টারনেটে  কোনো কিছু পেশ করতে চায়, অথবা কোনো মন্তব্য ইত্যাদি করতে চায়, তাহলে উচিত হবে প্রথমে বিবেচনা করে দেখা, এর দ্বারা কোনো উপকার হবে কি-না, তাকে সতর্ক হতে হবে এর দ্বারা যেন মুমিনদের কোনো কষ্ট না পৌঁছে,  মুমিনদের কোনো ক্ষতি না হয়। অতঃপর মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতা ছড়ানোর সকল  আকার-প্রকৃতি থেকে তাকে বিরত থাকতে হবে। অহেতুক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। মানুষের অনুভূতি নিয়ে তামাশায় লিপ্ত হওয়া, একে অপরকে অপবাদ দেওয়ার ডালি খুলে-বসা, একদলকে অন্যদলের উপর চড়াও করে দেওয়া ইত্যাদি থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
কোনো মন্তব্য অথবা কারো কথা খণ্ডন করতে হলে ইলমনির্ভর, আদব, সদয়ভাব ও শালীন ভাষায় করা জরুরি। কোনো কিছুতে অংশ নিতে চাইলে তা যেন হয় নিজস্ব ও সরাসরি নামে। সরাসরি নিজের নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভয় হলে উচিত হবে এমন কোনো বিষয় না লেখা যা অবৈধ, অশিষ্ট। যে দিন মানুষের অন্তরাত্মা উন্মুক্ত করে সবকিছু সম্মুখে নিয়ে আসা হবে সেদিন আল্লাহর  সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার বিষয়টি হৃদয়ে সজাক রাখতে হবে।

২- শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ থেকে দূরে থাকা

বুদ্ধিমানের উচিত শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ থেকে দূরে অবস্থান করা; শয়তান মানুষকে  গোমরাহ করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকে সারাক্ষণ। সকল পথ ও পদ্ধতি সে ব্যবহার করে যায় তার কর্মসিদ্ধির উদ্দেশ্যে। শয়তান মানুষের চিরশত্রু, যে শত্রু মানুষকে গোমরাহ করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাপন করে প্রতিটি মুহূর্ত। বুদ্ধিমান ব্যক্তি কখনোই তার শত্রুর প্রতি আস্থা রাখে না। ফেতনার থাবায় নিজেকে কখনো সঁপে  দেবে না।  ফেতনায় পড়বে না বলে অধিক আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়বে না;  জ্ঞানে, দীন ও ইলমে সে যে পর্যায়েই থাক না কেন।
বুদ্ধিমান ব্যক্তি বরং ফেতনা থেকে অবস্থান করে বহু দূরে। ফেতনার কাছাকাছি যাওয়া থেকে  সে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে। এসবের পরে যদি সে কখনো নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফেতনায় নিপতিত হয়, তবে তা থেকে নিষ্কৃতির জন্য আল্লাহর সাহায্য আসে। আল্লাহর করুণা তার সঙ্গ দেয়। আর যদি সে নিজের উপর অতিমাত্রায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠে, নিজের নখর দিয়ে নিজের  গোর নির্মাণ করে চলে, তবে তার উপর থেকে আল্লাহর লুতফ-করুণা সরিয়ে নেওয়া হয়।  ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে একা।
ইউসুফ আলাইহিসসালাম নিজ থেকে ফেতনায় নিপতিত হন নি, ফেতনাই বরং তার মুখোমুখি হয়েছে, আর তখন তিনি আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়েছেন। ফেতনার বিপদ থেকে  বাঁচার জন্য আল্লাহর আশ্রয় চেয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে আল্লাহ যদি নারীদের ষড়যন্দ্র থেকে তাকে রক্ষা না করতেন তবে তিনি জাহেলদের দলভুক্ত হয়ে যেতেন। আল্লাহর উপর তাঁর প্রচণ্ড ভরসার কারণেই আল্লাহর করুণা তার সঙ্গ দিয়েছে,  ফলে তিনি ভয়াবহ বিপদ থেকে রেহাই পেতে সক্ষম হয়েছেন।

 ৩- সময় নির্ধারণ  ও উদ্দেশ্য নির্ণয়

ইন্টারনেটের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার একটি উপায়, সময় নির্ধারণ ও সুনির্দিষ্টভাবে  কীভাবে  কি কাজ করতে যাচ্ছে  তা নির্ণয় করে নেওয়া, উদ্দেশ্য স্থির করে নেওয়া। এর বিপরীতে অনির্দিষ্টভাবে যদি একটির পর একটি  পেইজ ওপেন করে চলে, এক সাইটের পর অপর সাইট ভিজিট করে চলে, তবে অযথা সময় নষ্ট ব্যতীত  অন্য কিছু আশা করা যায় না। যদি কোনো উপকার আহরণে সক্ষম  হয় তবে তা হবে খুবই ক্ষীণ।

 ৪- পরিণাম দর্শন

ইন্টারনেটের  ফেতনা থেকে বাঁচার  জন্য বুদ্ধিমান ব্যক্তির উচিত হবে তার কৃতকর্মের পরিণামের প্রতি দৃষ্টি রাখা। নিজেকে দমন করা, নিজের প্রবৃত্তি-খায়েশের ঘাড়ে লাগাম লাগানো। ইবনুল জাউযি (রা.) বলেন, ‘হে তাকওয়ার দ্বারা সম্মানের আসনে  সমাসীন ব্যক্তি, তুমি তাকওয়ার সম্মানকে গুনাহের অপদস্ততার বিনিময়ে বিক্রি করো না। যে জিনিসের প্রতি তোমার খায়েশ জন্মেছে তা বর্জন করে তোমার প্রবৃত্তির তৃষ্ণা মেটাও, যদিও তা কষ্টদায়ক হয়, জ্বালা দেয়।’
তিনি আরো বলেছেন, ‘প্রবৃত্তিকে দমনের শক্তিতে এমন স্বাদ বয়েছে যা সকল স্বাদকে অতিক্রম করে যায়; তুমি কি দেখো না, যারা প্রবৃত্তিতে আরোপিত তারা কীভাবে অপদস্ত হয়; কেননা তারা পরাজিত। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি প্রবৃত্তিকে দমন করে তার  ব্যাপারটি সম্পূর্ণ উল্টো; কেননা সে শক্তিমান হওয়ার স্বাক্ষর রাখে, কারণ  প্রবৃত্তিকে দমন করায়  সে পারঙ্গমতার পরিচয় দেয়।

৫- যৌন আবেদনময়  সকল বিষয় থেকে দূরে থাকা আবশ্যক

যৌন আবেদন-সুরসুরি সৃষ্টিকারী সকল বিষয় থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে দূরে থাকতে হবে। খারাপ ও পর্নো সাইটগুলো অবশ্যই  বর্জন করতে হবে। যেসব ব্লগ-সাইটে ফাহেশ-অশালীন কথাবার্তা বলা হয়, যেসব প্রবন্ধে প্রবৃত্তি উসকিয়ে দেওয়ার বিশয়বস্তু রয়েছে, তা বর্জন  করা ঈমান ও আখলাকের দাবি। আবেদনময় চিত্র-ছবি, কামনা-বাসনা উসকিয়ে দেয় এমন  ফুটেজ থেকে দূরে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ; মানুষের মন সৃষ্টিগতভাবে প্রবৃত্তির প্রতি আসক্ত, প্রবৃত্তি যেদিকে টানে সেদিকেই সে চলতে শুরু করে। মানুষের মন বারুদ অথবা  প্রেট্রোলতুল্য, যা জ্বলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। এসব বস্তু প্রজ্জ্বলনকারী বস্তু থেকে যতক্ষণ দূরে থাকে, শান্ত থাকে, জ্বলার আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকে। এর অন্যথা হলেই তা জ্বলে উঠে, জ্বলে উঠা স্বাভাবিক।
মানুষের মনও অভিন্ন প্রকৃতির। মানুষের মন শান্ত-নিরব থাকে। তবে যখন তা  উসকিয়ে দেওয়ার মত  কোনো কিছুর নিকটবর্তী হয়, দুষ্টপ্রবৃত্তিকে জাগিয়ে দেওয়ার মত  কোনো শ্রব্য, দৃশ্য, পাঠ্য, অথবা শুঁকার বিষয়ের স্পর্শে আসে তখন তার ঘুমন্ত প্রবৃত্তি দানবের মত জেগে ওঠে, তার ব্যাধিগুলো আন্দোলিত হয়ে ওঠে, তার খায়েশ-আসক্তি বাধভাঙ্গা জোয়ারের মত হয়ে হাজির হয়। তাই এসব প্রবৃত্তিউদ্দীপক বিষয় থেকে দূরে থাকা অত্যন্ত জরুরি।

 ৬-দৃষ্টি অবনত  রাখা

অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনাকাঙ্খিত চিত্র কখনো কখনো সামনে এসে হাজির হয়। এমতাবস্থায় ব্যক্তি যদি তার দৃষ্টিকে অবনত  করে নেয়, তবে সে একদিকে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করল অন্যদিকে নিজের হৃদয়কেও তৃপ্তি দিতে সক্ষম হল। চোখ হৃদয়ের আয়না। চোখের লাগাম ছেড়ে দেওয়া অনুশোচনার কারণ, পক্ষান্তরে দৃষ্টি অবনতকরণ, হৃদয়কে করে শান্ত-তৃপ্ত। যখন কেউ তার দৃষ্টিকে লাগাম লাগিয়ে রাখে তখন তার হৃদয়ও কামনা-বাসনার মুখে লাগাম লগিয়ে রাখে। চোখ উন্মুক্ত-স্বাধীন করে দিলে, হৃদয়ও উন্মুক্ত, স্বাধীন হয়ে যায়।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ
মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। [সুরা নুরঃ৩০]
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (রা.) এ-আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এ-আয়াতে আল্লাহ তাআলা, দৃষ্টি অবনত করা ও লজ্জাস্থান হেফাযত করাকে আত্মার পরিশুদ্ধির সমধিক শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে ব্যক্ত  করেছেন। আর আত্মার পরিশুদ্ধির অর্থ সকলপ্রকার দুষ্ট, অশালীন, জুলুম, শিরক, মিথ্যা ইত্যাদি থেকে মুক্ত হওয়া।

 ৭- নিশ্চিত হওয়া

ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জন্য এটা  জরুরি যে, সে যা বলছে বা শুনছে বা পড়ছে অথবা বর্ণনা করছে তার শুদ্ধতা ভালভাবে যাচাই করে নেয়া, কেননা এটা মানুষের বুদ্ধিমত্তা, ভারিক্কি ও ইমানের পরিচয়। আর এটা জরুরি এ জন্যও যে, ইন্টারনেটে ভালমন্দ সবই লেখা হয়, সক্ষম-অক্ষম সবাই তাতে লেখে। অনেকেই আবার অপরিচিত নাম বা ছদ্মনামে লেখে। সে কারণেই বুদ্ধিমান ব্যক্তির কাজ হবে সতর্কতা অবলম্বন করা। তাই যখন সে  কোনো সংবাদ বা অন্য কোনো বিষয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানবে, সে ব্যাপারে  নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা  করবে। নিশ্চিত হওয়ার পর এ সংবাদ বা তথ্যটি প্রচারের উপযোগিতা নিয়ে ভাববে। যদি তা কল্যাণকর হয় তবে প্রচার করবে। অন্যথায় তা প্রচার থেকে বিরত থাকবে। এই ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ির কারণে কত খারাবিই না সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এমন রয়েছে যারা ইন্টারনেটে যা পায় মহাসত্যের মতো বিশ্বাস করে  নেয়। এটা নির্বুদ্ধিতার আলামত; কেনন বুদ্ধিমানের আচরণ হল নিশ্চিত হওয়া, সত্য-মিথ্যা যাচাই করে নেয়া। এমনকী কোনো সুপরিচিত ব্যক্তির কথা হলেও তা যাচাই করে দেখা উচিত। অপরিচিত মানুষের কথাবার্তার বেলায় কি অবস্থান নিতে হবে তা বলাই বাহুল্য। মানুষ যা শোনে তাই প্রচার করতে শুরু করা থেকে হাদীসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ব্যক্তির মিথ্যা বলার  জন্য এতটুই যথেষ্ট যে. সে যা  শুনে তা বর্ণানা করতে লাগে’ [মুসলিম]
ফেতনা-ফাসাদের সময় এ আদবটি অধিক গুরুত্বসহ পালন করা জরুরি। যে ব্যক্তি নিজের উপকার চায় তার উচিত নিরাপদে থাকার খাতিরে, ভর্ৎসনা থেকে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে, এই আদবটি কঠিনভাবে  ধরে রাখা। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِنَ الأَمْنِ أَوْ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَى أُوْلِي الأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ وَلَوْلا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لاتَّبَعْتُمْ الشَّيْطَانَ إِلاَّ قَلِيلاً
আর যখন তাদের কাছে শান্তি কিংবা ভীতিজনক কোনো বিষয় আসে, তখন তারা তা প্রচার করে। আর যদি তারা সেটি রাসূলের কাছে এবং তাদের কর্তৃত্বের অধিকারীদের কাছে পৌঁছে দিত, তাহলে অবশ্যই তাদের মধ্যে যারা তা উদ্ভাবন করে তারা তা জানত। আর যদি তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমত না হত, তবে অবশ্যই অল্প কয়েকজন ছাড়া তোমরা শয়তানের অনুসরণ করতে। [সূরা আননিসা: ৮৩]
শায়খ আল্লামা আব্দুর রহমান আসসুদি এ-আয়াতের তাফসিরে বলেন, ‘ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার বান্দাদেরকে, তাদের অযাচিত কাজ করার পর একটি দীক্ষা। অর্থাৎ যখন তারা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মুখোমুখি হবে, সর্বসাধারণের নিরপত্তা সংক্রান্ত কোনো বিষয় হবে, মুমিনদের আনন্দের বা দুঃখের কোনো সংবাদ থাকবে, তবে এ-বিষয়ে প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে, এবং সংবাদটি প্রচারে দ্রুততার আশ্রয় নেওয়া যাবে না। বরং বিষয়টিকে রাসূল ও উলুল আমরের কাছে রুজু করতে হবে, উলুল আমর হলেন, জ্ঞানী ও সুচিন্তিত মতামত দিতে পারঙ্গম, নসিহতকারী ও সুভদ্র ব্যক্তি যারা বিষয়ের নিগূঢ়তায় প্রবেশ করতে এবং মুমিনের স্বার্থ কোথায় তা বুঝতে সক্ষম। তারা যদি মনে করেন  যে সুনির্দিষ্ট  কোনো তথ্য প্রচার  করলে ফায়দা হবে, মুমিনদের উদ্যমতা বেড়ে যাবে, তাদের আনন্দের কারণ  হবে, শত্রুপক্ষের অনুশোচনা  বর্ধনের কারণ হবে, তাহলে তা প্রচার করবে, এর অন্যথা হলে তা প্রচার থেকে বিরত থাকবে। অর্থাৎ তারা তাদের  সুচিন্তা ও জ্ঞানে  তা  থেকে সঠিক বিষয়টি উদ্ধার করতে পারবে।
এখানে আমরা আরেকটি আদর্শিক বিধান  পাচ্ছি,  আর তা হল,  কোথাও যদি বাহাস শুরু হয় তবে উচিত হবে এ-বিষয়ে যারা দক্ষ তাদের শরণাপন্ন হওয়া। নিজেকে এগিয়ে না দেয়া.  কেননা এটাই নির্ভুলতার জন্য সমধিক উপযোগী পদ্ধতি। কোনো কিছু শোনার সাথে সাথে তা প্রচার করতে লেগে যাওয়া উচিত নয় এ-বিধানটিও আমরা  উক্ত আয়াতে খোঁজে পাই। বরং কথা বলার পূর্বে চিন্তাভাবনা করে দেখা, কল্যাণ কোথায় তা ভেবে দেখে প্রচার করবে কি করবে না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের  ব্যাপারেও  বিধান  পাচ্ছি  উক্ত আয়াতে।
নিশ্চিত হওয়া ও ভেবে-চিন্তে দেখার  প্রতি উদ্বুদ্ধ করে শায়খ সুদি অন্য একটি আয়াত উল্লেখ করেন, আয়াতটি হল,
وَلا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِنْ قَبْلِ أَنْ يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ وَقُلْ رَبِّ زِدْنِي عِلْماً
তোমার প্রতি ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করো না এবং তুমি বল, ‘ হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।’[সুরা ত্বাহাঃ১১৪]
তিনি বলেন, এখানে জ্ঞান অন্বেষণকারীর একটি শিক্ষণীয় আদব রয়েছে, আর তা  হল ইলমের ব্যাপারে চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে  ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা। কোনো বিষয়ে রায় দিতে তাড়াহুড়া না করা। গর্ববোধে নিপতিত না হওয়া। উপকারী ইলম অর্জন যাতে সহজ হয়  সে ব্যাপারে আল্লাহর কাছে  সাহায্য চাওয়া।
তিনি আরেকটি আয়াত উল্লেখ করেন,
لَوْلا إِذْ سَمِعْتُمُوهُ ظَنَّ الْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ   بِأَنفُسِهِمْ خَيْراً وَقَالُوا هَذَا إِفْكٌ مُبِينٌ
“যখন তোমরা এটা শুনলে তখন কেন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা তাদের নিজেদের সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করল না এবং বলল না যে, ‘এটাতো সুস্পষ্ট অপবাদ?”[সুরা নুরঃ১২]
এ আয়াত উল্লেখপূর্বক তিনি বলেন, এখানে আল্লাহ তাআলা দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন যে, যখন মুমিনরা  অন্যান্য মুমিন ভাইদের চরিত্রহননকারী কোনো  খারাপ সংবাদ শুনবে তখন তাদের ঈমান ও   প্রকাশ্য অবস্থা সম্পর্কে যা জানা আছে তার প্রতি নজর দেবে। সমালোচকদের কথায় কান দেবে না। বরং বিরাজমান মূল বিষয়কে ভিত্তি হিসেবে ধরবে, সমালোচকদের কথা বিশ্বাস না করে তা বরং প্রত্যাখ্যান করবে।

 ৮- ভেবে -চিন্তে মন্তব্য করা

এ ক্ষেত্রে জ্ঞানী ব্যক্তির উচিত হবে  সকল বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা। জানা থাকলেই সবকিছু বলে দিতে হবে, কথা এমন নয়। বরং ইসলাম ও মুসলমানের স্বার্থ বিবেচনায় রেখে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু বলা। ছোট বড় সকল বিষয়ে মন্তব্য করা সমুচিন বলে মনে করি না। ঘটে যাওয়া সকল  বিষয়েই মন্তব্য করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।  কারণ মন্তব্যকারী  হয়ত  বিষয়টি পরিপূর্ণভাবে আত্মস্থ করে নি। এমনও হতে পারে যে অবস্থা নিরুপনে সে ভুল করছে। তাই ধীরস্থিরতা খুবই জরুরি। আরবিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘ তাড়াহুড়াকারীর  পাথেয় হল ‘ভুল’। এর বিপরীতে  যে ব্যক্তি ভেবে-চিন্তে মন্তব্য  করবে, বিবেকের স্বচ্ছতা তাকে সহায়তা দেবে। বক্ষ্যমাণ অভিমতটি তার মস্তিষ্কে পরিপক্কতা পাবে, ভুল কম হবে। বরং এটা হেকমত ও প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে যে মানুষ তার জানা সববিষয় সম্পর্কেই মন্তব্য করে চলবে। চিন্তা-ভাবনার আশ্রয় নেয়া সত্ত্বেও, অথবা অভিমত সঠিক  হওয়া সত্ত্বেও, সকল বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত বলে মনে করি না। মানুষের উচিত কিছু অভিমত সঞ্চয় করে রাখা। তবে যদি হেকমত ও মাসলেহাত দাবি করে, অথবা পরিস্থিতির তাকাযা হয় তবে অভিমত ব্যক্ত করা চলে। যে বিষয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে তা যদি  বড়দের সাথে সম্পৃক্ত হয়  তবে তো কেবল পরামর্শের আকারে ব্যক্ত করা বাঞ্ছিনীয়। আরবিতে একটি কবিতা আছে যার অর্থ, ‘কথা বললে মেপে বল; কারণ কথা, বুদ্ধি অথবা দোষ উন্মুক্ত করে দেয়’।
ইবনে হিব্বান বলেছেন, ধীরস্থিরতা অবলম্বনকারীকে কেউ পেছনে ফেলতে পারে না। আর তাড়াহুড়াকারী অন্যদের নাগাল পায় না। একইরূপে যে চুপ থাকে তাকে খুব কমই লজ্জিত হতে হয়, আর যে বলে, সে  কমই নিরাপদে থাকে। তাড়াহুড়াকারী জানার পূর্বেই বলে ফেলে, বোঝার পূর্বে জবাব দেয়, অভিজ্ঞতা লাভের পূর্বেই প্রশংসকীর্তনে মত্ত হয়, প্রশংসা করার পর আবার তিরস্কারও করে, চিন্তা করার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে  ফেলে, আর বদ্ধপরিকর হওয়ার পূর্বেই চলতে শুরু করে।
তাড়াহুড়াকারীর সংগী হল লজ্জা। নিরাপদ থাকার বিষয়টি তার থেকে দূরে অবস্থান নেয়। আর আরবরা তাড়াহুড়াকে সকল লজ্জার মা বা উৎস বলে আখ্যায়িত করেছেন।
উমর ইবনে হাবীব  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘বলা হত: এমন কোনো তাড়াহুড়াকারী পাওয়া যাবে না যে প্রশংসিত, এমন কোনো রাগী ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যে খুশি। এমন কোনো স্বাধীন ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যে লোভী। এমন কোনো বদান্য ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যে হিংসুটে। এমন কোনো খাদক পাওয়া যবে না যে ধনী। এমন কোনো বিরক্তিপ্রকাশক ব্যক্তি পাওয়া যাবে  না যার বন্ধুবান্ধব আছে। একারণেই যারা প্রজ্ঞাবান তারা ধীরস্থিরতা অবলম্বন করার ব্যাপারে বারবার উপদেশ দিয়েছেন। বিশেষ করে যখন  কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করতে যাওয়া হবে তখন।

 ৯- উপস্থাপনে ভারসাম্য রক্ষা

বুদ্ধিমানের উচিত উপস্থাপনে ভারসাম্য রক্ষা করা, অতিরঞ্জন থেকে বেঁচে  থাকা। ছোটকে বড় করে না বলা। কেননা অতিরঞ্জন ও তিলকে তাল করে বলার মাঝে বাস্তবতা হারিয়ে যায়। একটি আরবি প্রবাদে আছে, ‘ উত্তমব্যক্তি, মধ্যমপন্থা অবলম্বনকারী ব্যক্তি।’

 ১০- আল্লাহ আপনাকে দেখছেন এ বিশ্বাস হৃদয়ে জাগ্রত রাখা।

ইন্টারনেটের ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বাঁচার উপায় হল আল্লাহ আপনাকে অবশ্যই দেখছেন এ বিশ্বাস হৃদয়ে জাগ্রত রাখা। কবি বলেন, ‘ আমার এ চোখ ঐ যুবকের চাইতে অধিক সুন্দর কাউকে দেখি নি যে নিভৃতে আল্লাহর মাকামকে ভয় করে।’ তাই বুদ্ধিমানের উচিত এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বসহ নেয়া। সবসময় এ কথা মনে রাখা যে, সকল গায়েব-অদৃশ্য আল্লাহর কাছে দৃশ্যমান। অবস্থা যদি এই হয় তাহলে ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহকে সমধিক হালকা দ্রষ্টা হিসেবে সাব্যস্ত করা কি করে সম্ভব?! এটা অনুধাবন করা উচিত যে, যে ব্যক্তি কোনো কিছু গোপন করবে আল্লাহ তাকে ঐ বিষয়ের  পোশাক পরিয়ে দিবেন, যে ব্যক্তি কোনো কিছু গোপন করল, চাই তা ভাল হোক বা মন্দ, আল্লাহ তা প্রকাশ করবেন। আমল যে ধরনের হবে, প্রতিদানও সে অনুপাতেই হবে। ইরশাদ হয়েছে,
 لَيسَ بِأَمانِيِّكُم وَلا أَمانِىِّ أَهلِ الكِتٰبِ ۗ مَن يَعمَل سوءًا يُجزَ بِهِ وَلا يَجِد لَهُ مِن دونِ اللَّهِ وَلِيًّا وَلا نَصيرًا
 “যে মন্দ কাজ করবে তাকে তার প্রতিফল দেয়া হবে।” [ সূরা আন নিসা:১২৩]
এ ব্যাপারে কিছু আলোকিত বাক্য শুনুন, আবু হাযেম সালমা ইবনে দিনার (র.) বলেছেন, ‘ যখন কোনো ব্যক্তি তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে সম্পর্ক দুরস্ত করে নেয়, তখন আল্লাহও তার মাঝে ও মানুষের মাঝে সম্পর্ককে ভালো করে দেন, এর বিপরীতে যখন কোনো ব্যক্তি তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে সম্পর্ককে নষ্ট করে দেয়, আল্লাহও তখন তার মাঝে ও মানুষের মাঝে সম্পর্ককে নষ্ট করে দেন। আর নিশ্চয়ই একজনের চেহারার তুষ্টি অনুসন্ধান সকলের তুষ্টি অনুসন্ধানের তুলনায় সহজ। এর  বিপরীতে যদি আপনার ও আল্লাহর মাঝখানকার সম্পর্ক বিগড়ে দেন তবে সবার সাথেই সম্পর্ক বিগড়ে দিলেন। সবাইকেই রাগিয়ে  তুললেন’।
মু’তামার ইবনে সুলাঈমান বলেছেন, ‘ কোনো ব্যক্তি যদি সংগোপনে কোনো পাপ করে তবে সে তার লাঞ্ছনা মাথায় নিয়েই সকাল করে’।
ইবনুল জাওযি র. বলেন,‘ আল্লাহার ব্যাপারে আপনি দলিল তালাশ করেছেন, অতঃপর পৃথিবীতে যত ধূলিকণা রয়েছে তার থেকেও অধিক পেয়েছেন, আল্লাহর আজব বিষয়ের মধ্যে আপনি  দেখেছেন যে, আল্লাহ যাতে সন্তুষ্ট নন মানুষ যদি এমন বিষয় গোপন করে, তাহলে বিলম্বে হলেও আল্লাহ তা প্রকাশ করে দেন। লোকেরা তা নিয়ে কথা বলে। যদিও মানুষ তা দেখে নি।
হয়ত এই পাপকারীকে এমন বিপদে ফেলা হয় যার দ্বারা তার সকল পাপ মানুষের সামনে উন্মোচিত হয়ে যায়। এ যাবৎ সে যত পাপ  গোপন করেছে, এ বিষয়টি তার জবাব হয়ে যায়। এটা এ জন্য ঘটে যাতে মানুষ জানতে পারে যে পাপ ও পদস্খলের প্রতিদান দেয়ার অবশ্যই  একজন রয়েছেন। আর তিনি এমন এক সত্তা, কোনো পর্দা বা প্রতিবন্ধকতা, তার ক্ষমতাকে রহিত করতে পারে না, যার নিকট  কোনো আমলই হারিয়ে যায় না। অনুরূপভাবে মানুষ পুণ্যের কাজকেও হয়ত গোপন করে, কিন্তু তা প্রকাশ পেয়ে যায়, মানুষ তা নিয়ে কথা বলে, তারা বরং আরো অতিরিক্ত বলে, এমনকী সে ব্যক্তি তাদের কাছে এমন প্রতীয়মান হয় যে সে যেন আদৌ কোনো পাপ করে নি। মানুষ তার ভাল কাজগুলোই উল্লেখ করে। এ রকম এ জন্য ঘটে, যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে অবশ্যই একজ প্রতিপালক রয়েছেন যিনি আমলকারীর  কোনো আমলকেই বিনষ্ট করেন না।
মানুষের হৃদয় ব্যক্তির অবস্থা জানে, তারা তাকে ভালবাসে অথবা বর্জন করে, তাকে তিরস্কার করে অথবা তার প্রশংসা করে, তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে সম্পর্ক যে পর্যায়ের হয় সে অনুযায়ী এগুলো ঘটে। আল্লাহই যথেষ্ট ব্যক্তির সকল উৎকন্ঠা দূর করার ক্ষেত্রে, সকল অশুভ বিষয় তাত্থেকে উঠিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে। আর যদি কোনো ব্যক্তি তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে সম্পর্ককে বিগড়ে দেয়, সত্য অনুসরণের বিবেচনা  থেকে সরে আসে, তবে তার প্রাপ্য বিষয় উল্টে যাবে। যারা তার প্রশংসা করত তারাই তাকে তিরস্কার করতে শুরু করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ নিশ্চয় নিভৃতে আল্লাহর সাথে সুসম্পর্ক চর্চার প্রভাব রয়েছে যা প্রকাশ্য দৃষ্টিতে চলে আসে। এমন অনেক মুমিন রয়েছেন যারা নিভৃতে আল্লাহকে সম্মান করেন, অতঃপর সে তার প্রবৃত্তির খায়েশকে ছেড়ে দেয়। কেননা সে আল্লাহর শাস্তিকে ভয় পায়, অথবা তার ছাওয়াবের আশা করে। অথবা আল্লাহকে সম্মান করে তা ছেড়ে দেয়। এ কাজ করে সে যেন সুবাসযুক্ত কাঠ  ধুপদানির  উপর রেখে দেয়, অতঃপর তা সুগন্ধি ছড়াতে থাকে। মানুষ তা শুঁকে, অবশ্য তাদের জানা থাকে না এ সুগন্ধির উৎস কোথায়।
মানুষ তার প্রবৃত্তির খায়েশ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য যতটুকু মুজাহাদ করবে, ততটুকু তার মাঝে ও আল্লাহর মাঝে মহব্বত বাড়বে। বর্জনীয় অথচ লোভ্য-প্রিয় বস্তুকে ছেড়ে থাকার জন্য মানুষ যতটুকু শ্রম দেবে তার সুবাসও তত বাড়বে, আর এ সুবাস দাহ্য কাঠের প্রকৃতি হিসেবে বাড়ে অথবা কমে। অতঃপর আপনি মানুষকে দেখবেন যে ঐ লোকটিকে তারা সম্মান-শ্রদ্ধা করছে, তাদের মুখ থেকে তার প্রশংসা রের হচ্ছে, যদিও তারা জানে না কেন এমন হচ্ছে। তারা তাদের অনুভূতিকে ব্যক্ত করতে অপারগ।
এ সুবাস মৃত্যুর পরও সুগন্ধ ছড়িয়ে যেতে পারে।  তবে তা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন হতে পারে।  তাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যাদেরকে মানুষ দীর্ঘকাল স্মরণ রাখে, অতঃপর ভুলে যায়। আবার এমন লোকও রয়েছে যাদেরকে এক’শ বছর পর্যন্ত লোকেরা স্মরণ রাখে, অতঃপর ভুলে যায়। আবার এমনও ব্যক্তি আছে যাদেরকে অনন্তকাল স্মরণ রাখা হয়।
ঠিক এর উল্টো হল ঐ ব্যক্তি যে সৃষ্টিকুলকে ভয় পায়। যে নিভৃতে আল্লাহকে সম্মান করে না। অতঃপর পাপের সাথে তার স্পকৃক্ততা যতটু থাকে সে অনুপাতেই তাত্থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, মানুষের হৃদয় তাকে ঘৃণা করে। যদি তার পাপ অল্প হয়, মানুষ তার  বদনাম করে না বটে, তবে প্রশংসা করে অল্প, হ্যাঁ তার পুণ্যের কারণে মানুষের হৃদয়ে তার সম্মানটুকু বজায় থাকে। আর যদি পাপের সংখ্যা অধিক হয় তাহলে সর্বোচ্চ যা হয় তা হল মানুষ তার ব্যাপারে, প্রশংসা-তিরস্কার কোনোটাই  করে না, শুধুই কেবল চুপ থাকে। নিভৃতে যারা পাপ করে তাদের পাপের ফলে দুনিয়া-অখিরাত উভয় জাহানেই কষ্ট-যাতনা বরণ করে নিতে হয়। তাকে যেন বলা হচ্ছে, থাকো, নিজের জন্য তুমি যা পছন্দ করেছ, তাতেই তুমি থাক। অতঃপর সে অনন্তকাল কষ্ট-যাতনাতেই থেকে যায়।
প্রিয় পাঠক, দেখুন, পাপকে প্রাধান্য দিলে পাপ কীভাবে মানুষকে দিকভ্রান্ত করে যাতনার  গহ্বরে নিক্ষেপ করে। আবুদ্দারদা রা. বলেন, ‘ নিশ্চয় বান্দা যখন নিভৃতে আল্লাহর অবাধ্য হয়, আল্লাহর মানুষের হৃদয়ে তার ব্যাপারে ঘৃণা ঢেলে দেন, যদিও তারা আঁচ করতে পারে না। তাই আমি যা লিখলাম তা নজর দিয়ে দেখুন, যা উল্লেখ করলাম তা জানুন, আপনারা আপনাদের গোপন ও নিভৃতের মুহূর্তগুলো সম্পর্কে উদাসীন হবেন  না; কেননা আমলের নির্ভরতা নিয়তের উপর। আর প্রতিদান দেয়া হয় ইখলাস-ঐকান্তিকতা অনুযায়ী’।
ইমাম ইবনুল জাওযী র. বলেন,‘ যতটুকু আপনারা  আল্লাহকে সম্মান করবেন, আল্লাহও আপনাদেরকে ততটুকু সম্মান করবেন। যতটুকু আপনারা আল্লাহর কদর-ইহতেরাম করবেন আল্লাহও আপনাদেরকে ততটুকু কদর ইহতেরাম করবেন’।
আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি, আমি এমন ব্যক্তি দেখেছি, যারা ইলমচর্চায় জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হয়েছেন। তবে তিনি সীমালঙ্ঘন করেছেন; ফলে মানুষের কাছে হালকা হয়ে গিয়েছেন। তার বিশাল জ্ঞানভাণ্ডার ও মুজাহাদা থাকা সত্ত্বেও মানুষ তার প্রতি ফিরেও তাকাত না।
আমি দেখেছি যারা যৌবনে ইবাদত-আরাধনায় লিপ্ত থেকেছে, যদিও ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল, তবু আল্লাহ তার কদর বাড়িয়ে দিয়েছেন। মানুষের হৃদয়ে তার কদর বসে গেছে, অতঃপর তার মধ্যে যতটুকু খায়ের-ভালাই আছে  তার থেকেও অধিক তাকে প্রশংসা করেছে।
আমি এমন ব্যক্তিকেও দেখেছি যে তার সবকিছু ঠিকঠাক পেত যখন সে সত্যপথে চলার ক্ষেত্রে দৃঢ়তা দেখাত, আবার যখন সত্য থেকে হেলে পড়ত, আল্লাহর করুণাও তাত্থেকে দূরে সরে যেত। মানুষের পাপের ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমত-করুণা ব্যাপক  না হলে উল্লিখিত ব্যক্তিদের মান-ইজ্জত সব হাওয়ায় উড়ে যেত, তবে যা হয় তার অধিকাংশটাই হয় শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে, অথবা শাস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে কমলতা গ্রহণপূর্বক।

 ১১- যা উপকারী তা  পেশ করায় অংশ নেয়া

ইন্টারনেটের খারাপ দিকগুলো থেকে  বেঁচে থাকা যেমন জরুরি, তদ্রপভাবে মুসলমানের উচিত, বরং বলা যায় আবশ্যক, ইন্টারনেটের ভালো দিকগুলো হতে উপকৃত হওয়া। বিশেষ করে ব্যক্তি যদি ইন্টারনেট বিষয়ে জ্ঞান রাখে অথবা এই ময়দানে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকে। এ ধরনের ব্যক্তির জন্য, উপকারী কন্ট্রিবিউশন, মন্তব্য, বিশ্বস্ত ইসলামি সাইটগুলো মানুষকে দেখিয়ে দেয়া, ইত্যাদির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা জরুরি।

12:05 PM Posted by Just for you 2